
জহির সিকদার, মুক্তির কণ্ঠ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার চরচারতলা গ্রামে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশের দায়ের করা সেই মামলায় আসামী করা হয়েছে প্রবাসী ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান কে। এদের মধ্যে তিনজন প্রবাসী ও একজন সাবেক জনপ্রতিনিধি।
বিদেশে থেকেও তিন প্রবাসী মামলার আসামি হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, সংঘর্ষের ঘটনায় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো. জিয়াউদ্দিন খন্দকারকে আসামি করা হয়েছে। ফলে এলাকাবাসীর মাঝে এ নিয়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে এবং পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
এই মামলার ৫. নাম্বার আসামি করা হয়েছে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো. জিয়াউদ্দিন খন্দকারকে। অপরদিকে বিদেশে থাকা প্রবাসী আসামিরা হলেন- ২১. নাম্বার মো. বাক্কী মিয়া (৩২), পিতা মৃত সমন মিয়া, ২৯. নাম্বার মন মিয়া (৫০), পিতা মৃত মরাজ মিয়া, ৩৮. নাম্বার সোহেল মিয়া (৩২), পিতা মৃত ধন মিয়া। উক্ত সংঘর্ষ চলাকালীন সময় তারা প্রবাসে অবস্থান করছেন, এমনকি তারা প্রবাসেই বসবাস করছেন। তবুও তাদেরকে সংঘর্ষের মামলায় আসামি করায় স্থানীয় লোকজনের মনে অনেক প্রশ্ন উঠছে।
প্রবাসীদের পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনরা বলেন, মামলা করার পরে আমরা জানতে পেরেছি আমাদের সন্তানদের এ মামলার আসামি করা হয়েছে। কিন্তুু আমাদের সন্তানরা এ সংঘর্ষের সাথে কোন ভাবেই জড়িত নয়। তাহলে পুলিশ কি ভাবে তাদের নাম দিলেন? এটা রহস্যময়। আমরা প্রশাসনের কাছে দাবী জানাাচ্ছি, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে যারা সংঘর্ষের সাথে জড়িত তাদেরকে বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে এবং প্রকৃত দোষীদের শাস্তি দেওয়া হউক। পাশাপাশি যারা বিদেশে আছেন তাদেরকে এ মিথ্যা মামলায় যাতে না ফাঁসানো হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো. জিয়া উদ্দিন খন্দকার বলেন, পূর্ববিরোধকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের একটি মামলায় আমাকে ৫. নাম্বার আসামি করা হয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে আমি কোনওভাবেই জড়িত নয়। প্রশাসনের কাছে আমি এই মামলার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে জানতে মামলার বাদি আশুগঞ্জ থানা-পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ মফিজ উদ্দিনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, আমরা তদন্ত করে দেখব প্রবাসে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হতে পারলে তদন্তের মধ্যে তাদের নাম বাদ যাবে। অযথা নিরপরাধ কাউকে হয়রানি করা হবে না।
যদিও বিষয়টি স্বীকার করে সরাইল ও আশুগঞ্জ সার্কেল সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান জানান, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো. জিয়াউদ্দিন খন্দকারের বিষয়টি এবং প্রবাসে থাকা তারা তিন জন বিদেশে আছেন কিনা সে বিষয়টি তদন্তের মাধ্যে খোঁজ নিয়ে দেখা হবে। ভিডিও ফুটেজ দেখে আসামিদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। পাশাপাশি তদন্তের সময় কোন ধরনের সংশ্লিষ্টতা না পাওয়া গেলে অবশ্যই প্রবাসীদের নাম মামলা থেকে বাদ দেয়া হবে।
উল্লেখ গত (২ এপ্রিল ) শনিবার আশুগঞ্জ উপজেলার চরচারতলা গ্রামে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আনু সরকার এর বাড়ি ও শেয়াল বাড়ির লোকজনের মাঝে সংঘর্ষ শুরু হয়। এরই জের ধরে উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে নেমে পড়ে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলে অন্তত ৪ জন পুলিশ সদস্য এবং স্থানীয় এক সাংবাদিক আহত হন। এ ঘটনায় ৭০ জনের নামোল্লেখ এবং আরও ১৫০ থেকে ২০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করে। আর এই মামলায় চার জন আসামিকে গ্রেপ্তার দেখান আশুগঞ্জ থানা পুলিশ।