
জহির সিকদার, মুক্তির কণ্ঠ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলা খাড়েরা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বয়স্ক ও স্বল্পশিক্ষিত ভোটারেরা ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট দিতে গিয়ে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে । ইভিএমে ভোটদানের পদ্ধতি অনেকেই বুঝতে পারছেন না বলে ভোট গ্রহণে অনেক বেশি সময়ক্ষেপণ হয়ছে। এতে করে কেন্দ্রের বাইরে ভোটারদের দীর্ঘ সময় করতে হয়েছে অপেক্ষা।
বুধবার (২ নভেম্বর) সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত সোনারগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বুগীর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দেলী পূর্ব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দেলী পাতাইসার উচ্চবিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র ঘুরে এই বিড়ম্বনার চিত্র দেখা গেছে।
সকাল ৯টায় সোনারগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোটকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, কেন্দ্রের ৪ নম্বর বুথে এক নারী গোপন কক্ষে ঢুকে ইভিএমে ভোট দেওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে তিনি সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তার কাছে ফিরে এসে ভোট দেওয়ার পদ্ধতি শিখে নিয়ে আবার ভোট দেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে তিনি এবারও ভোট দিতে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসেন। পরে তিনি আবার ভোটদানের পদ্ধতি শিখে নিয়ে গোপন কক্ষে গিয়ে ভোট দেন। এভাবে তাঁর ভোট দিতে সময় লাগে ১১ মিনিট। তার সাথে কথা বলে জানা যায়, ওই নারী পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। তিনি বলেন, আমি আগে কখনো মেশিনে ভোট দেইনি। ৬ বার চেষ্টার পর ভোট দিয়েছি। ব্যালটের ভোটই ভালো।
১৩ মিনিট চেষ্টার পর ভোট দিয়ে বের হয়ে আসেন মো. ইকরাম হোসেন (৬০)। তিনি খাড়েরা সোনারগাঁও এলাকার বাসিন্দা। ইভিএমে ভোটদানের বিষয়ে জানতে চাইলে বিরক্তি প্রকাশ করে বলেন, এই মেশিন কোনোদিন দেখিনি ও শুনিনি। আমরা বুড়া মানুষের জন্য এই মেশিন নয়। সিল দেওয়া ভোটই ভালো ছিল। ওই বুথের সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা বলেন, বয়স্ক ও স্বল্পশিক্ষিত ব্যক্তিদের ইভিএম পদ্ধতি বুঝিয়ে দিতে সময় লাগছে। এ জন্য ভোটদানে কিছুটা সময় বেশি লাগছে। বুগীর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্র গিয়ে দেখা যায়, ডেকোরেটরের রঙিন কাপড় দিয়ে অস্থায়ী দুটি বুথ করা হয়েছে। ওই বুথ কক্ষগুলো খুবই অপ্রশস্ত ও ছোট। প্রার্থীদের এজেন্ট ও নির্বাচনে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা গাদাগাদি করে বসে ভোট নিচ্ছিলেন।
ওই কেন্দ্রের ১ নম্বর বুথে এক ভোটার গোপনকক্ষে যান। তবে তিনি ভোটদানের পদ্ধতি বুঝতে পারছিলেন না। এ সময় গোপন কক্ষের পাশ থেকে প্রার্থীর এজেন্টেরা তাঁকে ভোট দেওয়ার পদ্ধতি বলে দিচ্ছিলেন। প্রায় ১২ মিনিট পর ওই ভোটার ভোট দিয়ে বের হন। প্রায় ৩০ মিনিট ১ নম্বর বুথের বাইরে অবস্থান করে দেখা যায়, মাত্র ৪ জন ভোটার ওই সময়ের মধ্যে ভোট দেন। ১ নম্বর বুথের পোলিং কর্মকর্তা বলেন, বয়স্ক ভোটারেরা ভোট দিতে বেশি সময় নিচ্ছেন।
খাড়েরা ইউপি নির্বাচনের রিটার্নিং ও কসবা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম বলেন, নির্বাচনের আগেই ভোটারদের ইভিএমে ভোটদানের পদ্ধতি শেখানো হয়েছে। এরপরও কিছু ভোটার ইভিএমে ভোট দিতে সময় নিচ্ছেন। তাঁরা আগে কখনো ইভিএমে ভোট দেননি বলে জটিলতা দেখা দিচ্ছে।