
মুক্তির কণ্ঠ ডেস্কঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে জুমিনা বেগম কে (১৯) হত্যা করা হয়েছে।
আত্মহত্যা নয়। এমনটাই দাবী করেছেন জুমিনার পরিবার। এনিয়ে এলাকাতোও ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশের তথ্যবিবরণীতে আত্মহত্যার প্ররোচনায় মৃত্যু দেখানো হয়েছে। আর নিহতের পিতা আলাল মিয়ার দাবি তার মেয়ে আত্মহত্যা করেনি, তাকে মেরে ফেলা হয়েছে। তার
মেয়ের শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পেয়েছে।
উপজেলা সদরের কুট্রাপাড়া এলাকার আলাল মিয়ার ছোট মেয়ে জুমিন বেগম। গত একবছর আগে তার বিয়ে হয় একই ইউনিয়নের দক্ষিণ আরিফাইল গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে ইমন মিয়া (২৭)’র সাথে।
গত (০২ অক্টোবর) বিকেলে পারিবারিক কলহের কারণে তার মৃত্যু হয়। নিহতের স্বামী’র বাড়ির লোকজন আত্মহত্যা করেছে বলে দাবি করছেন। অন্যদিকে নিহতের পিতা আলাল মিয়া বলছেন তার মেয়েকে মেরে এখন আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়া হচ্ছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আত্মহত্যার প্ররোচনার অপরাধে স্বামী ইমন মিয়া কে প্রধান আসামি ও শাশুড়ী মোছাঃ নাজমা বেগম কে দুই নম্বর আসামি করা হয়েছে। শাশুড়ী বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছে।
নিহতের পিতা আলাল মিয়া বলেন, একবছর আগে তার মেয়ে কে বিয়ে দেয়া হয় ইমন মিয়া (২৭)’র সাথে। বিয়ের সময় নগদ এক লক্ষ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার যৌতুক হিসেবে দেয়া হয়। পরে মেয়ের স্বামী, শশুর, শাশুড়ী প্রায়ই তার মেয়েকে শারীরিক ও মানসিক চাপ দিত বাবার বাড়ি থেকে আরো টাকা আনার জন্য। সবশেষ একটি সুকেজের জন্য তার মেয়েকে চাপ দেয় স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন। সুকেজের টাকার জন্য আলাল মিয়াকে তার মেয়ে জানালে তিনি দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। পরে একসময় আলাল মিয়া স্বীকার করেন যে টাকা দিবে। এই কথা মেয়ে তার শাশুড়ী কে বললে তিনি রেগে আলাল মিয়ার সাথে কথা বলতে চায়নি। পরে খবর আসে তার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। তার দাবি মেয়ে আত্মহত্যা করেনি তাকে মেরে ফেলা হয়েছে। জমিনা চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলো।
আলাল মিয়া আরো বলেন, তার মেয়ের মৃত্যুর পরে সে যখন হাসপাতালে ছুটে যায় তখন সরাইল থানা পুলিশ মেয়ের মৃত দেহ তাকে দেখতে দেয়নি। পুলিশ পরে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পরের দিন সরাইল থানায় পুলিশের সাব – ইন্সপেক্টর জয়নাল আবেদীন তরিঘরি করে কাগজে সই দিতে বলে। আমি সই দিতে না চাইলে পুলিশ আমাকে ধমক দেয় ও গালাগাল করে। পুলিশ নিজেদের ইচ্ছে মতো মামলা সাজিয়ে আমার কাছ থেকে স্বাক্ষর নিয়েছে। আমাকে ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত করেছে। আমি গরীব মানুষ আমি এর সঠিক বিচার চাই।
নিহতের বড়বোন জবিলা আক্তার বলেন, আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়া লাশের ঘরে গিয়ে আমার বোনের শরীরে দুই যায়গায় আঘাতের চিহ্ন দেখতে পাইছি। গাল ও কানের মাঝখানে কালো দাগ ছিল, আর বুকের নিচে ডান দিকেও কালো দাগ ছিল। আমার বোনরে মাইরা ফালাইছে, আমার বোন আত্মহত্যা করছে না।
এই বিষয়ে সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আসলাম হোসেন বলেন, এই মামলায় নিহতের শাশুড়ী জেল হাজতে রয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে এলে বিস্তারিত জানা যাবে।
বাদীকে জোর করে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে সাংবাদিক এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, বাদিকে জোর করে স্বাক্ষর নেয়া হয় নাই, তার সাথে তার পরিবারের অনেক সদস্যই তখন উপস্থিত ছিল।