বাবা হত্যার বিচার না পেলে আমরা চার ভাই আত্মহত্যা করব। মুক্তির কণ্ঠ 

 

মুক্তির কণ্ঠ ডেস্ক :
আমার বাবার হত্যাকারীদের বিচার চাই। আমাদেরকে কেন এতিম করা হয়েছে? কি দোষ ছিল আমার বাবার? আমার বাবার হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড চাই। আমার বাবার হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি না হলে আমরা চার ভাই এক সাথে আত্মহত্যা করব। এমননি ভাবে নিহতের বড় ছেলে ফাহিম রহমান কেঁদে কেঁদে বাবার হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধনে কথাগুলো বলছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে প্রতিপক্ষের হাতে নিহত হাফিজ উদ্দিনের সন্তানেরা।

শুক্রবার (১১ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়নের হরিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে হাফিজ উদ্দিনের বড় ছেলে ফাহিম রহমানের নেতৃত্বে বাবা হাফিজ উদ্দিনের হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন গ্রামবাসী ও নিহতের পরিবার।

মানববন্ধনে স্থানীয় মুদি মাল ব্যবসায়ী মুজিবুর রহমান বলেন, হাফিজ উদ্দিন একজন ন্যায় বিচারক ছিলেন। উনার কারণে আমি আমার মালামাল গুলো ফেরত পেয়েছি। আমার মালামাল উদ্ধার করতে গিয়ে চোর রায়হানদের হাতে খুন হয়েছেন হাফিজ উদ্দিন ভাই।

স্থানীয় বাসিন্দা জাবেদা বিবি (৭০), নুরজাহান বেগম (৫০), আলমগীর হোসেন, সাইফ মিয়া বলেন, হাফিজ উদ্দিন খুব ভাল মানুষ ছিলেন। উনি ছিলেন একজন ন্যায়বিচারক। যার কারণে মাদকসেবনকারী চোরদের হাতে নির্মমভাবে নিহত হয়েছেন। আমরা এই হত্যার সর্বোচ্চ বিচার ফাঁসি চাই।
এসময় মূল হোতা রায়হানসহ সকল আসামিকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে শাস্তির দাবি করে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন
করেন নিহতের স্বজনসহ কয়েকশতাধিক স্থানীয় বাসিন্দা ।

নিহত হাফিজ উদ্দিনের স্ত্রী ও মামলার বাদী শাহানা আক্তার বলেন, আমার স্বামী একজন সৎ মানুষ ছিলেন। উনি হক কথা বলতেন। এজন্য গ্রামের খারাপ লোকরা আমার স্বামীকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। আমি এখন আমার ছেলে মেয়ে নিয়ে কিভাবে চলব। আমি আপনাদের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার স্বামীর হত্যার সর্বোচ্চ বিচার চাই। ফাঁসি চাই।

সরাইল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বাবুল হোসেন বলেন, মামলার মূলআসামী রায়হানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

উল্লেখ্য গত ৯ মে হরিপুর গ্রামের মজিবুর রহমানের একটি মোদী দোকান চুরি হয়। নিহত হাফিজ উদ্দিন সেই চুরির মালামাল সালিসি বৈঠকের মাধ্যমে মজিবুর রহমানকে ফিরিয়ে দেই। তারপর থেকে
সালিশে সাব্যস্ত হওয়ায় চোর রায়হানসহ তার সহযোগীরা সালিস কারক তারই দাদা হাফিজ উদ্দিনের উপর ক্ষিপ্ত হয়। এই সালিশের জেরে
গত ৪ আগষ্ট বিকাল ৫ টার দিকে হাফিজ উদ্দিনকে উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামে মসজিদের কাছে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে গুরুতর আহত করে রায়হানগংরা । পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১টায় তিনি মারা যান। এ ঘটনায় নিহত হাফিজ উদ্দিনের স্ত্রী বাদী হয়ে গত ৫ আগস্ট
রায়হানসহ ১১জনের নামে সরাইল থানা একটি হত্যামামলা দায়ের করেন।

Leave a Reply