
জহির সিকদার, মুক্তির কণ্ঠ
বন্দর ও শিল্পনগরী আশুগঞ্জের আল আমিন নামে স্থানীয় এক কথিত সাংবাদিক বিয়ের আগে থেকেই অসৎ চরিত্রের অধিকারী। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মেয়েদের সাথে পরকিয়ায় জড়িয়ে পরে। একাধিক নারীর সঙ্গে তার অনৈতিক সম্পর্কে বাধা দিলে স্ত্রীর উপর চলত মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন এবং বিভিন্ন কু-কর্মের অভিযোগ উঠছে কথিত সাংবাদিক আল আমিনের বিরুদ্ধে।
মামলার সুত্রে জানা যায়, গত ২৬ মার্চ চরচারতলা গ্রামের মো. শফিকুল ইসলাম ওরফে ছোট্ট আবুর মেয়ে দীনা বেগমের সাথে তারুয়া ইউনিয়নের মো. মতি মিয়ার ছেলে কথিত সাংবাদিক আল আমিনের সাথে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা দেন মোহরে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় দীনা বেগমের বাবা কথিত সাংবাদিক আলামিনকে যৌতুক হিসেবে নগদ ৫ লক্ষ টাকা ও ৪ ভরি স্বর্ণ প্রদান করেন। কিন্তু কথিত সাংবাদিক স্বামীর লোভ ছিল অন্তহীন।
বিয়ের পর থেকেই আরও যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীর উপর চলত নির্যাতন। সাংবাদিক স্বামীর পরকীয়ায় বাঁধা দিলে তখন তার বাবার নিকট থেকে নগদ ৫ লক্ষ টাকা যৌতুক এনে দেওয়ার জন্য চাপ দিত। টাকা এনে দিলে কিছুদিন শান্ত থাকত সাংবাদিক আল আমিন। এভাবে দীনা বেগম তার বাবার নিকট থেকে অনেক বার স্বামীর মন রক্ষার জন্য টাকা এনে দিয়েছে। নির্যাতনের এ বিষয় নিয়ে গ্রামে একাধিক বার সালিস বৈঠকও হয়েছে। কিন্তুুু নতুন করে পরকীয়ায় বাঁধা এবং চাহিদা মত টাকা না এনে দিলেই আবার স্ত্রীর উপর চলত অমানুষিক নির্যাতন।
এ ঘটনায় গত ২২ জুলাই দীনা বাদি হয়ে তার স্বামী কথিত সাংবাদিক আল আমিনকে প্রধান আসামি করে মোট ৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন। এই মামলার অন্যান্য আসামিরা হল আল আমিনের মা রাজিয়া বেগম,তার মামা ওমর মিয়া এবং দুলাল মিয়া।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভিকটিমের বাবা শফিকুল ইসলাম প্রকাশ ছোট্ট আবু বলেন, আল আমিনের মা রাজিয়া বেগম সব কিছুর জন্য দায়ী। আল আমিনের মা তার ছেলেকে দিয়ে আমার মেয়ের উপর অমানুষিক নির্যাতন করে আমার মেয়েকে গুরতর অসুস্থ করে ফেলে এবং একরাত আমার মেয়েকে পাশের একটি কক্ষে আটকে রাখে। এঘটনায় আমি প্রতিবাদ করলে আমাকে এবং আমার ছেলেকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন কথিত সাংবাদিক আল আমিনসহ তার মামারা।
তিনি আরো বলেন, পুলিশ আল আমিনকে গ্রেফতার না করায় সে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠছে। প্রতিদিন আল আমিন আমাকে ফোন দিয়ে হুমকি দিচ্ছে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য। এই অবস্থায় আমি আমার ছেলে মেয়েকে নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় আছি। প্রশাসনের কাছে আমি আমার জানমালের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা চাই। সে যেন পালিয়ে বিদেশ যেতে না পারে এজন্য আল আমিনকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবী জানাই।
এ বিষয়ে আলামিনকে মুঠোফোনে জানতে চাইলে সে এ বিষয়ে কিছুই জানেনা বলে জানাই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তারুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. বাদল সাদির বলেন, কথিত সাংবাদিক আল আমিনের স্ত্রীর উপর নির্যাতনের এ বিষয় নিয়ে গ্রামে একাধিক বার সালিস বৈঠকও করেছি। আল আমিন একজন ভয়াবহ ও বেপরোয়া টাইপের লোক। সে কখন কি বলে তার কথার কোন হদিস পাই না। ছোট্ট আবুকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দেওয়ার ঘটনাটি সত্য। আমরা তার সঠিক বিচার দাবী করি।
এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজাদ রহমান বলেন,আল আমিনের বিরুদ্ধে কোর্টের একটি অভিযোগ পেয়েছি। কোর্টের আদেশ অনুযায়ী আলা আমিনকে আটকের চেষ্টা অব্যাহত আছে। আশা করছি দ্রুত আল আমিনকে আটক করতে পারব।