
মুক্তির কণ্ঠ ডেস্কঃ
সৌদি আরব থেকে লাশ হয়ে দেশে ফিরলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের শহিদুল ইসলাম(৩৫)। বিয়ে করানোর জন্য বিয়ের পাত্রী ঠিক করেছিলেন তার মা বাবা। দেশে এসেই বিয়ে করবেন। কিন্তু বিয়ে করা হলো না শহিদুলের। নিহতের দেড় মাস পর আজ শুক্রবার দুপুরে নিজ বাড়িতে আসে তাঁর মৃতদেহ।
শহিদুল সরাইল উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়নের তেলিকান্দি গ্রামের আরাজ উদ্দিনের বড় ছেলে।
বৃহস্পতিবার ভোর রাতে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে তাঁর মরদেহ ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছে। বিমানবন্দরে শহিদুলের স্বজনরা তাঁর লাশ গ্রহণ করেন।
সরেজমিন শুক্রবার সকালে নিহত শহিদুলের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাড়িতে লাশ আসার অপেক্ষায় স্বজনরা। এমন খবরে এলাকার লোকজন তাঁর বাড়িতে ছুটে আসেন। কখন আসবে লাশ। এর অপেক্ষায় এলাকার লোকজন। দুপুরে আসলো লাশ। সঙ্গে সঙ্গে পরিবারের আহাজারিতে আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে পড়ে। বাদ আসর জানাজা শেষে নিজ গ্রাম তেলিকান্দি উত্তরপাড়া কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়। পাঁচ ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার বড় শহিদুল ইসলাম ।
জানা গেছে, শহিদুল ইসলাম ৭বছর পূর্বে জীবিকার তাগিদে সৌদি আরবে পাড়ি জমান। সেখানে তিনি রোড ক্লিনার হিসেবে কাজ করতেন। বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করা হয়েছিল। বিয়ে করতে গত ২৬ফেব্রুয়ারী দেশে আসার জন্য বিমানের টিকেটও কেটে ছিলেন। নিয়তির নির্মম পরিহাস, ১০ ফেব্রুয়ারি কাজে যাওয়ার সময় তাঁদের গাড়ি উল্টে গিয়ে গুরুতর আহত হয়। পরে তাঁকে উদ্ধার করে সে দেশের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১৩ ফেব্রুয়ারী চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। বিয়ে করা হলো না শহিদুলের । স্বপ্নগুলো লাশ হয়ে ফিরলো কফিনে করে।
শহিদুলের ছোট ভাই অহিদ মিয়া জানান, আজ থেকে ৭বছর ২মাস আগে তাঁর ভাই সৌদি আরব যান। সেখানে তাঁদের গাড়ি উল্টে আহত হওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যান।
তাঁর বিয়ের পাত্রী ঠিক করা ছিল। বিয়ের জন্য ২৬ ফেব্রুয়ারী দেশের আসার টিকেট কনফার্ম করেছিল।
কিন্তু আজ দেশে তাঁর লাশ আসলো। বিয়ে করা হলো না তাঁর ভাইয়ের। এই কষ্টের স্মৃতি তাঁর পরিবারকে সারাজীবন কাঁদাবে।
বাবা আরাজ উদ্দিন বলেন, ‘মারা যাওয়ার ৪/৫ দিন আগেও ফোন করে বলেছিল, ১০/১২ দিনের মধ্যেই দেশে আসবে। দেশে আসার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। সেই তো এল, কিন্তু জীবিত আসতে পারেনি তাঁর সোনা মানিক।