
মোঃ রফিকুল হাসান সোহাগ – মুক্তিকন্ঠ,
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের উদ্যোগে সংবর্ধনা পেলেন ভাষাসৈনিক মিয়া আব্দুল মতিন। গত ২০ ফেব্রুয়ারি (সোমবার) বিকেলে জেলা পরিষদ মিলনায়তনে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আমিনুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান যুদ্ধাহত বীরমুক্তিযোদ্ধা আল-মামুন সরকার।
সভায় বক্তারা বলেন, মিয়া মতিন আখাউড়া উপজেলার টনকী গ্রামের ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলা ভাষার জন্য আন্দোলন করেন। আট জনের নেতৃত্বে মিছিল বের করেছিলেন তিনি। মিছিলটি উপজেলার মোগড়াবাজার ও গঙ্গাসাগর রেলস্টেশন এলাকা প্রদক্ষিণ করে। পরে তাদের এ আন্দোলনটি গণবিক্ষোভে রূপ নেয়। মিছিলের খবর পৌঁছে যায় তৎকালীন মুসলিম লীগ সরকারের কাছে।
১৯৫২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি পুলিশ তাকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায়। দু’মাস কারাভোগের পর ছাড়া পান। এরপর থেকে তিনি ভাষার জন্য সভা-সমাবেশ করেন। ১৯৫৬ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান মতিন সহ আরও কয়েকজনকে ঢাকায় ডেকে নিয়ে তাঁর সাহসিকতার জন্য তাদেরকে উপহার সামগ্রী প্রদান করেন।
ভাষাসৈনিক মতিনের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এক আবেগঘন পরিবেশ তৈরি হয়। জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সহ উপস্থিত অন্যরা অনির্ধারিত ‘গার্ড অব অনারের’ মাধ্যমে মিয়া মতিনকে বিদায় জানানোর সময় সবার চোখ অশ্রুসিক্ত হয়ে ওঠে।
মতিন বলেন, বায়ান্নতে আমি মোগড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ছিলাম। পাকিস্তানি জান্তা শাসক মায়ের ভাষা কেড়ে নিতে চায় শোনার পর আর স্থির থাকতে পারিনি। আন্দোলন শুরু করি। জেল থেকে বের হয়েও ভাষার জন্য সভা-সামাবেশ করেছিলাম। এই আন্দোলনের জন্য বঙ্গবন্ধু ঢাকায় ডেকে নিয়ে আমাকে প্যান্ট ও শার্ট উপহার দিয়েছিলেন।
প্রথেমেই মিয়া মতিনকে স্বাগত জানান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর দমুক্তিযোদ্ধা আল-মামুন সরকার। সাংবাদিক আল-আমীন শাহীনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের প্রধান আলোচক ছিলেন কবি জয়দুল হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাহারুল ইসলাম মোল্লা, কসবা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রুহুল আমীন ভুইয়া ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়াসেল সিদ্দিকি। অনুস্টানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কালের কণ্ঠের জেলা প্রতিনিধি বিশ্বজিৎ পাল বাবু।